আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে রচিত ভাষাতত্ত্ব ও বাংলা ব্যাকরণের অনন্য গ্রন্থ, যা বাংলা ভাষার উৎস, গঠন, বিবর্তন ও ব্যাকরণগত স্বাতন্ত্র্যকে বিশ্লেষণ করে। ছাত্র, শিক্ষক ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী। Read more
"ভাষা - প্রসঙ্গ ও বাংলা ব্যাকরণ" গ্রন্থটি বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ সম্পর্কে একটি আধুনিক ও গবেষণালব্ধ দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। লেখকদ্বয়ের মতে, বাংলা ব্যাকরণ একদা সংস্কৃত ব্যাকরণের ছায়ায় গড়ে উঠলেও, বাংলা ভাষার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য, ধ্বনি, গঠন ও প্রকাশভঙ্গির ভিত্তিতে আলাদা ব্যাকরণ প্রতিষ্ঠা একান্ত প্রয়োজন। বইটিতে বাংলা ভাষার উৎস প্রাকৃত-অপভ্রংশ-অবহট্ট থেকে শুরু করে চর্যাগীতি, লিপির বিবর্তন, ধ্বনি-শব্দ-পদ-বাক্যর গঠন ও বিকাশ সুস্পষ্টভাবে আলোচিত হয়েছে।
ভাষা - প্রসঙ্গ ও বাংলা ব্যাকরণ
✍️ লেখক: সন্তোষকুমার মন্ডল ও নির্মলকুমার সামন্ত
🏷️ প্রকাশক: উদ্দালক পাবলিশিং হাউস
Bengali Grammar
ভাষাতত্ত্ব
বাংলা ব্যাকরণ বই
Modern Bengali Grammar
Language and Grammar Book
Bengali Linguistics
Competitive Exam Preparation
WBCS Bengali
Santosh Kumar Mondal
Nirmal Kumar Samanta
Bangla Bhasha
Grammar for College Students
Bangla Grammar Analysis
ভাষা প্রসঙ্গ
Uddalak Publishing
BookBharat Books
Bengali Grammar for Teachers
বাংলা ব্যাকরণ গাইড
Language Evolution Book
ধ্বনি ও বর্ণ
সংস্কৃতের অনুসরণে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা যেমন সম্প্রদান কারক বা অব্যয়ীভাব সমাস, যেগুলি আধুনিক ব্যাকরণে স্বীকৃত নয়, সে সম্পর্কেও এই গ্রন্থে যুক্তিসম্মত বিশ্লেষণ ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করা হয়েছে। ভাষার তাত্ত্বিক আলোচনাকে সরলভাবে উপস্থাপন করে, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, WBCS ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীদের জন্য বইটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভরযোগ্য ব্যাকরণ সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রসঙ্গক্রমে ধ্বনি, লিপি, শব্দ, পদ, বাক্য, ছন্দ ও অলংকারের আলোচনায় আরোহ ও অবরোহ উভয় পদ্ধতির ব্যবহার বইটিকে পাঠযোগ্য ও বোধগম্য করে তুলেছে। গ্রন্থের শেষে সংযোজিত নির্ঘণ্ট তথ্যসন্ধানী পাঠকের জন্য এক বিশেষ সহায়।
একদা সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুসরণে বাংলা ব্যাকরণ রচিত হয়েছে। বাংলা ভাষার নিজস্ব ধ্বনি বাংলা বর্ণমালায় ঠাঁই পায়নি। অথচ বাংলা ভাষায় অনুচ্চারিত সংস্কৃত ধ্বনি বাংলা বর্ণমালায় গৃহীত হয়েছে। সেদিন সংস্কৃত ভাষাকে বাংলা ভাষার জননীত্বের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ভাবা হয়েছিল, সংস্কৃতের আনুগত্য স্বীকার ও স্বীকরণের মধ্যদিয়েই বাংলা ভাষার মুক্তি ঘটবে।
কিন্তু প্রকৃতপ্রস্তাবে মা যশোদার কোলে কৃষ্ণের মতো বাংলা ভাষা সংস্কৃতের কোলে লালিত হলেও সংস্কৃত তার জননী নয়। প্রাকৃত-অপভ্রংশ-অবহট্ট-এর বিবর্তনের ফলে বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে। প্রাকৃত উৎসে জাত এই ভাষাটি চর্যাগীতির পর থেকেই অপভ্রংশ-অবহট্ঠ ত্যাগ করে সংস্কৃতভাষার শব্দসম্ভার গ্রহণ ক'রে, সংস্কৃত সাহিত্যের অনুবাদ ও অনুষঙ্গে আভিজাত্য অর্জনের প্রয়াস পায়।
কিন্তু বাইরে সংস্কৃতের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে আভিজাত্যলাভের যে প্রয়াসই পাক না কেন, অনভিজাত গোত্রে জন্মগ্রহণের জন্য রক্তগত জাতিভেদ দূর করতে পারেনি। বাংলা বাক্যের গঠন যেমন সংস্কৃতের মতো বিভক্তি-প্রত্যয়মূলক নয়, তেমনি প্রকাশভঙ্গি ও উচ্চারণরীতিও স্বতন্ত্র। এই স্বাতন্ত্র্য তথা বাংলা ভাষার নিজস্বতাকে মর্যাদা দিয়ে বাংলা ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণ রচনা করা একান্তই কর্তব্য। এই বোধের দ্বারা পীড়িত হয়ে একদা পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি ব্যাকরণের কিছু রদবদলের প্রয়াস পেয়েছিল।
সেই প্রয়াসের মধ্য দিয়ে বাংলা ব্যাকরণ বাংলা ভাষার নিজস্ব প্রকৃতি ও প্রবণতার উপর ভিত্তি করে ক্রমেই সংস্কৃত ব্যাকরণের আনুগত্য অস্বীকৃতির মাধ্যমে স্বতন্ত্র মর্যাদায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আজ আর বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারকের জায়গা নেই, অব্যয়ীভাব সমাসকে বাংলা ব্যাকরণে খুঁজে পাওয়া যাবে না। অথচ বহুল প্রচলিত কিছু ব্যাকরণ গ্রন্থে এগুলি বহাল তবিয়তে বর্তমান।
পাঠকের কাছে পুরোনো ধারার অনুবর্তন ভুলবার্তা পৌঁছে দেয়, যা একদম কাম্য নয়। কী কারণে আধুনিক বাংলা ব্যাকরণে এদের ঠাঁই নেই, এ গ্রন্থে সে-সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত দান করা হয়েছে। সম্প্রদান কারক কিংবা অব্যয়ীভাব সমাস হিসাবে একদা স্বীকৃত শব্দ বা পদগুলিকে আধুনিক ব্যাকরণে কোন যুক্তিতে কোন শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে এবং এ জাতীয় নানা প্রসঙ্গ এই গ্রন্থে উঠে এসেছে।
ভাষাতত্ত্বের তাত্ত্বিক আলোচনায় প্রবেশের অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই গ্রন্থের পূর্ণতার কথা ভেবে তাত্ত্বিক রূপরেখা দানের প্রয়াস আছে। প্রাথমিক ধারণাকে ভিত্তি করে ভাষার গঠন ও বিবর্তন প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। এ গ্রন্থে বাংলাভাষার ব্যাকরণের পাঠ গ্রহণই মূল অভিপ্রায়। তাই বাংলা ভাষায় পৌঁছানোর জন্য অবরোহ পদ্ধতিতে বিশ্বের ভাষা থেকে ভারতের ভাষা এবং তা থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বৈচিত্র্যের পাঠ গৃহীত হয়েছে।
লিপি প্রসঙ্গে উদ্ভব, বৈচিত্র্য ও বিবর্তনের পাঠ গৃহীত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে প্রচলিত লিপির ফটোকপি তুলে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নির্মল দাশের 'চর্যাগীতি পরিক্রমা', জয়ন্ত চক্রবর্তীর 'ব্রাহ্মী থেকে বাংলা', কল্যাণ কিশোর চট্টোপাধ্যায়ের 'বাংলা পুথির গঠন ও প্রকৃতি', অমিত্রসূদন ভট্টাচার্যের 'শ্রীকৃষ্ণকীতন সমগ্র' ইত্যাদি নানা গ্রন্থের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।
ব্যাকরণ প্রসঙ্গের আলোচনায় আরোহ পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র একক থেকে বৃহত্তর এককের দিকে এগানো গেছে। প্রথমে ধ্বনিপ্রসঙ্গ, তারপর লিপি বা বর্ণপ্রসঙ্গ, অতঃপর শব্দপ্রসঙ্গ, পদপ্রসঙ্গ ও পরিশেষে বাক্যপ্রসঙ্গের আলোচনা করা হয়েছে। ছন্দ ও অলংকারকে আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করে এই গ্রন্থের সম্পূণর্তা প্রতিপাদনের প্রয়াস পাওয়া গেছে।
স্কুল-কলেজের আগ্রহী ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক পদপ্রার্থী, ডবলু.বি.সি.এস ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে এই গ্রন্থের বিষয়ভিত্তি পরিকল্পিত হয়েছে। এতদিন এই সমস্ত পরীক্ষার্থীদের স্কুলপাঠ্য ব্যাকরণ বইয়ের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। কিন্তু সীমিত সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে লেখা বই তাদের সার্বিক চাহিদা পূরণে সমর্থ হয়নি।
গ্রন্থের কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভ্রাতৃপ্রতিম স্নেহাস্পদ ছাত্র শ্রীমান সঞ্জয় রায় নির্ঘণ্ট প্রস্তুত করে দিয়ে তথ্যসন্ধানীদের শ্রম লাঘবের প্রয়াস পেয়েছেন, তাঁকে অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই। উদ্দালক পাবলিশিং হাউসের সহকর্মী, যাঁদের ঐকান্তিক প্রয়াসে গ্রন্থটির প্রকাশ সম্ভব হল, তাঁদের আন্তরিক ধনবাদ জ্ঞাপন করি।
সাফল্য-ব্যর্থতা একান্তভাবেই পাঠকের বিচার্য। এ নিয়ে লেখকের কোনো মন্তব্য চলে না। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধে এ গ্রন্থের পরিকল্পনা করেছিলাম। গ্রন্থটি যে শেষপর্যন্ত মুদ্রিত আকারে প্রকাশ হতে পেরেছে, এতেই আমরা যার-পর-নাই খুশি। ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হলেই আমাদের শ্রমের সার্থকতা।
সন্তোষকুমার মণ্ডল
নির্মলকুমার সামন্ত
Specifications | Descriptions |
---|---|
Lorem, ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Exercitationem, facere nesciunt doloremque nobis debitis sint?